আসূর্য থামবে? না থামলেও, আমার মত হল, থামা উচিত। মহাবিশ্বেরও, কখনো কখনো থামা উচিত। এই ধরনের দাবী করতে পারাটা একজন পলিটিশিয়ানের জন্য অহঙ্কার ধরা হইতেছে যদিও, কিন্তু একজন কবি অহরহই এমন দাবী ও আকাঙ্ক্ষা করেন। রসুল তো চাঁদ ও সূর্যরে ইশারা দিয়ে শাসন করতেন। কাফিরদের সামনে ইশারা দিয়ে চাঁদকে দু টুকরা করেছিলেন একবার। হযরত ওমর এক নদীকে চিঠি লিখে শাসিয়েছিলেন, এইখানে ওমর পলিটিশিয়ান যদিও। নদী ওমরের কথা শুনেছিল।
তো, খাইবার যুদ্ধের সময় একদিন, হযরত আলীর জন্য সূর্যকে ফিরিয়ে এনেছিলেন রসুল মুহাম্মদ। ক্লান্ত রসুল জিরোচ্ছিলেন আলীর কোলে মাথা রেখে। সূর্য অস্ত হয়ে গেল, কিন্তু আলী রসুলকে জাগালেন না, আর আলীর আসর কাজা হয়ে গেল। রাসূল জেগে ওঠার পরে যখন জানলেন, তখন দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! আলীর জন্য সূর্যকে পুনরায় উদিত করে দাও। তখন, হাদিসের বর্ণনাকারী আসমা বলছেন : সূর্য পুনরায় উদিত হয়ে যমীন ও পাহাড়ের উপর এসে গেল। অতঃপর হযরত আলী ওযু করে নামায আদায় করলেন। তারপর ছাহবা নামক স্থানে সূর্য অস্তমিত হয়ে গেল।
এইসব ধর্মেরই গল্প। কিন্তু, মনে রাখতে হবে, লৌকিক ভাষার সাথে গভীর তত্ত্বকথার, মারেফতের ভাষার একটা ঐতিহাসিক বাহাছ ও মোকাবেলা আছে। ধর্ম যদিও গভীর তত্ত্বজ্ঞানের বাইরে সম্ভব না, ধার্মিক বইলা দাবীদাররা তাদের জানা জ্ঞানের বাইরে গভীর তত্ত্বকথারে ব্লাসফেমাস মানেন প্রায়ই। ফলে, মনসুর হাল্লাজ যখন আনাল হক কইলেন, তার ফাঁসি হল। মানে, তত্ত্বকথা ও ক্ষমতার ভাষা সব সময় পরস্পরকে না চেনার ইতিহাসই।
এই না চেনার ইতিহাসই কবিদের সাথে ক্ষমতাবান ধার্মিকদের ঝগড়া, গানঅলাদের গ্রেফতার ও অন্যান্য। তবে, আমার মতে, তার জন্য সূর্য থেমে যাবে, এই আত্মবিশ্বাস না থাকলে কারো কবি যেমন হওয়া উচিত না, পলিটিশিয়ান হওয়াও উচিত না। মনে কইরেন না, অহঙ্কারী জামাত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর জন্য এইসব কথা বলছি। তবে চৌধুরীর এই ভাষা কবিদের ভাষার কাছাকাছিই। বিপরীতে, কবিরা তার ক্ষেত্রে ফতওয়াবাজ হয়ে গেছেন। মানে আর কবি থাকলেন না। এইটা খারাপ ঘটনাই।
#রিফাতহাসান #ফেসবুকেও প্রকাশিত।
Be the first to comment!