unsocial
Rifat Hasan UnSOCIAL
We must discuss injustice not out of sympathy for the afflicted, but because injustice is a prison for both the oppressed and the oppressor.
§
Rifat Hasan's profile picture
Follow

Rifat Hasan

@rifatology

Writer. Intellectual. Political.

Chittagong, Bangladesh rifathasan.com Born January 17, 1980

Visit any post and you can comment anonymously. If you log-in with social you will get a verified badge!

Get Verified
Posts

আসূর্য থামবে? না থামলেও, আমার মত হল, থামা উচিত। মহাবিশ্বেরও, কখনো কখনো থামা উচিত। এই ধরনের দাবী করতে পারাটা একজন পলিটিশিয়ানের জন্য অহঙ্কার ধরা হইতেছে যদিও, কিন্তু একজন কবি অহরহই এমন দাবী ও আকাঙ্ক্ষা করেন। রসুল তো চাঁদ ও সূর্যরে ইশারা দিয়ে শাসন করতেন। কাফিরদের সামনে ইশারা দিয়ে চাঁদকে দু টুকরা করেছিলেন একবার। হযরত ওমর এক নদীকে চিঠি লিখে শাসিয়েছিলেন, এইখানে ওমর পলিটিশিয়ান যদিও। নদী ওমরের কথা শুনেছিল।

তো, খাইবার যুদ্ধের সময় একদিন, হযরত আলীর জন্য সূর্যকে ফিরিয়ে এনেছিলেন রসুল মুহাম্মদ। ক্লান্ত রসুল জিরোচ্ছিলেন আলীর কোলে মাথা রেখে। সূর্য অস্ত হয়ে গেল, কিন্তু আলী রসুলকে জাগালেন না, আর আলীর আসর কাজা হয়ে গেল। রাসূল জেগে ওঠার পরে যখন জানলেন, তখন দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! আলীর জন্য সূর্যকে পুনরায় উদিত করে দাও। তখন, হাদিসের বর্ণনাকারী আসমা বলছেন : সূর্য পুনরায় উদিত হয়ে যমীন ও পাহাড়ের উপর এসে গেল। অতঃপর হযরত আলী ওযু করে নামায আদায় করলেন। তারপর ছাহবা নামক স্থানে সূর্য অস্তমিত হয়ে গেল।

এইসব ধর্মেরই গল্প। কিন্তু, মনে রাখতে হবে, লৌকিক ভাষার সাথে গভীর তত্ত্বকথার, মারেফতের ভাষার একটা ঐতিহাসিক বাহাছ ও মোকাবেলা আছে। ধর্ম যদিও গভীর তত্ত্বজ্ঞানের বাইরে সম্ভব না, ধার্মিক বইলা দাবীদাররা তাদের জানা জ্ঞানের বাইরে গভীর তত্ত্বকথারে ব্লাসফেমাস মানেন প্রায়ই। ফলে, মনসুর হাল্লাজ যখন আনাল হক কইলেন, তার ফাঁসি হল। মানে, তত্ত্বকথা ও ক্ষমতার ভাষা সব সময় পরস্পরকে না চেনার ইতিহাসই।

এই না চেনার ইতিহাসই কবিদের সাথে ক্ষমতাবান ধার্মিকদের ঝগড়া, গানঅলাদের গ্রেফতার ও অন্যান্য। তবে, আমার মতে, তার জন্য সূর্য থেমে যাবে, এই আত্মবিশ্বাস না থাকলে কারো কবি যেমন হওয়া উচিত না, পলিটিশিয়ান হওয়াও উচিত না। মনে কইরেন না, অহঙ্কারী জামাত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর জন্য এইসব কথা বলছি। তবে চৌধুরীর এই ভাষা কবিদের ভাষার কাছাকাছিই। বিপরীতে, কবিরা তার ক্ষেত্রে ফতওয়াবাজ হয়ে গেছেন। মানে আর কবি থাকলেন না। এইটা খারাপ ঘটনাই।

#রিফাতহাসান #ফেসবুকেও প্রকাশিত।

November 27, 2025

35 readers till now, 35 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

আবুল সরকারের একটা গান, শেথ হাসিনার প্রশংসা কইরা, নতুনভাবে প্রচার হচ্ছে। সম্ভবত, এই প্রচারের উদ্দেশ্য, তার গ্রেফতাররে নায্যতা দেওয়া। তাহলে আরো গভীর প্রশ্ন করতে পারতে হবে। বাংলাদেশের কবি সাহিত্যিক শিল্পীদের বড় একটা অংশই হাসিনার সুবিধাভোগি ও দালাল ছিল। প্রশংসা কইরা এন্তার লেখালেখি করেছেন, গান আর নাচনকুদন করেছেন, সাধারণত যেটা হয়। এদের কেউ তওবা করেছেন শুনি নাই। আবুল সরকারকে আমি চিনি না। কিন্তু, শেখ হাসিনারে লইয়া এই যে যারা গান কবিতা লিখেছেন, তাদের সবাইরে কি আপনি গ্রেফতার করতে চান? কোন আইনে চান?

#রিফাতহাসান #ফেসবুকেও প্রকাশিত।

November 27, 2025

45 readers till now, 45 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

স্রেফ একটা নির্বাচনি জোট হইয়া ওঠার সংগ্রাম গণঅভ্যুত্থানের নেতা নাহিদদের জন্য বেশ নাজুক সংগ্রামই। নতুন বাংলাদেশের এথিকাল অথরিটি হইয়া ওঠার চাইতে তারা যদি এই পথই বেছে নেয় শেষমেষ, তারা ইতিহাসের ভেতর থেকে উঠে এসে ইতিহাসেই মিশে যাওয়ার সাধনা করছে। নাহিদরা ইতিহাসের সন্তান। সাবজেক্ট নয়, ইতিহাসকে শাসন করেই রাজনীতিতে এসেছে ওরা। এইটা কি নাহিদরা ধীরে ধীরে ভুলে যেতে থাকবে?

#রিফাতহাসান #আনসোশালেও প্রকাশিত।

November 26, 2025

34 readers till now, 34 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

পরিচয়ের রাজনীতি তো সমস্যাজনক। আমি 'তৌহিদী' জনতা ও 'বাউল', উভয় পরিচয়ে তৎপরদের রাজনীতিরে সন্দেহ করি। একই সাথে আমি শুধু আবুল সরকার না, সব ধরনের অনুভূতি ও অবমাননা মামলার শিকারদের মুক্তি চাই। যেমন, কবি সোহেল হাসান গালিবেরও মুক্তি চাই আমি।

#রিফাতহাসান

November 25, 2025

45 readers till now, 45 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

আনসোশালে অল্প লিখেছিলাম। এখানে আবার উসকে দিই। গণভোট আর জুলাই সনদ নিয়া।

গণভোটের চার দফা, আর জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সাথে গণভোট, উভয়ই কিম্ভূত আইডিয়া বলতে হবে। এই আইডিয়ার রূপকাররা জাতীয় নির্বাচন আর গণভোটরে এক ভাইবা বসেছেন, বা আমাদেরকে এক ভাববার প্রস্তাব করছেন। আমার মতে, জাতীয় নির্বাচন এক্সক্লুসিভলি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের ব্যাপার হলেও, গণভোট সুপেরিয়র রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রশ্ন। একই দিনে নির্বাচন এবং গণভোট ফলত একটা ফাঁদে রূপান্তরিত হতে পারে, যা অবশেষে এক রশিতে দুই ফাঁসির প্রতীকী ধারণারে উসকে দেবে। এইখানে একই সকথে উভয়ের মৃত্যু হতে পারে।

আমার মত হল, ইউনুস এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারলে ভাল। অলরেডি নির্বাচন কমিশন বলেছে, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট চ্যালেঞ্জিং। এই একই দিনে দুই নির্বাচনের ধারণা কোন মেধাবীর ( কোটা না মেধা? হা হা।) মাথা থেকে আসছে জানি না, কিন্তু যে মহামুনিই ভাবুন, নির্বাচন কমিশনের এই কমেন্টরেও অন্তত উনারা আমলে নিতে পারেন, আমাদের কথা না নিন।

দুইটা বিষয়ে স্পষ্ট থাকা দরকার।

এক. গণভোট রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। দেশ কারা পরিচালনা করবে, সেই শাসন ক্ষমতার ম্যান্ডেট ধরনের কোন কল্পনা নয় এইটা, সালাহউদ্দিন আহমদরা মিষ্টি মধুর স্বরে যেটি বলে থাকেন প্রায়ই। বরং গণভোটের গন্তব্য হল, যারাই দেশ চালানোর জন্য নির্বাচিত হবেন, তারা কীভাবে চালাতে বাধ্য থাকিবেন, লঙ্ঘন না করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন, তারে লইয়া ভাবা। এমন কি সংবিধান কেমন হবে, তারে লইয়াও। ফলে, নির্বাচন হল মাইনা চলার ব্যাপার, আর গণভোট ডিকটেইট করার ব্যাপার। এইটা স্বয়ং নির্বাচিতদের প্রতি যে মেন্ডেট কল্পনা করা হয়, সেই মেন্ডেটেরও লেজিটিমেসির প্রশ্ন ঠিকঠাক করবে।

এইটুক যদি বুঝেন, তাহলে এইটাও বুঝবেন, এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তরে নির্বাচন কমিশনের ফাঁদে রাইখা সামনে আগানো মানে, গণভোট, সাথে জুলাই সনদেরও একটা অনিশ্চিত গন্তব্য ঠিক কইরা দেওয়ার ফন্দি, যা, আপাত একটা বিপদই। এর আঁচ কিছুটা বুঝবেন, যখন দেখবেন, বুদ্ধিজীবীরা এবং পত্রিকাগুলো এখন প্রচুর আলাপ তৈরী করছে, না ভোট জয়ী হলে কী হবে ইত্যাদি। এই আলাপগুলোর সারাংশ হল, না ভোট হইলে বিএনপি বা অন্য কোন দল জুলাই সনদ থিকা স্বাধীন হইয়া যাবে।

হা হা। এইটা একটা মজার প্রেডিকশন বটে।

এই নিয়া প্রথম আলোর এক্সপ্লেইনার পড়লাম। ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা পাঠালেন এক বন্ধু। জিয়া হাসানের লেখা পাঠালেন একজন। সবার এক্সপ্লেইনার এক। 'না’ ভোট জয়ী হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী দল জুলাই সনদ মেনে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে না। পরবর্তী সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ইচ্ছার ওপরই সংস্কার নির্ভর করবে। মানে, সবাই একটা কু নিয়া বইসা আছে। এই কু এর পেছনে কে থাকবে, তাও ঠিক হয়ে গেছে মোটামুটি। বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিন ফারুক বিহানবেলাতেই সব ঠিকঠাক কইরা ঘোষণা দিছেন। উনি সমর্থকদের না ভোটের আহবান জানাইছেন।

আপাতত, এহ ইতিবৃত্ত।

এই ইতিবৃত্তের উপসংহার হল, নির্বাচনে জিততে চাওয়া দলগুলো ও ওদের বুদ্ধিজীবীরা এই কু-এর উপরেই সওয়ার হইতে চান। এই কু-ভাবনাটা তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন ইউনুস সাহেব, গণভোট এবং নির্বাচন একই দিনে ঘোষনা কইরা। এই সওয়ারের মতলবগুলোতে যেমন ইচ্ছা বাপের দেশের শাসনের বিরুদ্ধে যে জনকনসেনসাস এর উপরে ভিত্তি কইরা স্বৈরাচারের পতন হল, তার উপরে দাঁড়াবার কোন আগ্রহ নেই। শুধু ক্ষমতা দখলের বদ মতলব আছে। কিন্তু তাদের এই ভাবনা যে ভুল, তারে নিয়া আলাপ করবো আর একদিন, যদি সুযোগ হয়।

দ্বিতীয়ত, গণভোটের চার দফা, এইটা কেমন আইডিয়া? এইটা, আমার মতে, মূলতই গণভোটকে ব্যর্থ করার আইডিয়া। এজনগণ কর্তৃক একটা সফল গণঅভ্যুত্থান ও স্বৈরাচারের পতনের পরে জনগনের হাতে বাচ্চাদের বাল্যশিক্ষা ধরিয়ে দেওয়ার মত ব্যাপার হল এইটা।

মূলত, গণভোট হতে হবে এক দফায়। আর তার নাম জুলাই সনদ। জুলাই সনদে কী আছে, তা তো ঐতিহাসিকভাবে রিজলভড হয়ে আছেই। তারে আবার গণভোটের ব্যালটে ভেঙে বুঝিয়ে দেওয়ার মানে হল, মানুষ যেটি বুঝে, গণভোট মানে যেমন ইচ্ছা বাপ বেটির শাসন আর চলবে না, এইটার যে পতন হল, তার পক্ষে ভোট, এইটারে হুদাই জটিল হিশেবে উপস্থাপন।

এর ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে অলরেডি। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জনগণকে জিগেশ করছেন, আপনারা কি গণভোট, সনদ এসব বোঝেন? হা হা। জনগণ যে এই ভাষায় এই সব বোঝেন না, তা অবশ্য সত্যিই। কিন্তু জনগন যে ভাষায় বুঝেন, কথা বলেন, মির্জা ফখরুল কি সেই ভাষা হাজির করতে চান, নাকি জনইচ্ছেরেই ব্যর্থ করতে বলেন? ফখরুল প্রমুখ রাজনৈতিক নেতারা এই সত্য এমনভাবে বলছেন, আপনার মনে হবে, এই না বুঝার ঘটনার কারণেই অন্তত গণভোট আর জুলাই সনদ বন্ধ করতে হবে।

ফখরুল তাদেরকে বুঝাচ্ছেন, 'ঘাড়ের ওপর' তাদের না বুঝা 'গণভোট ও সনদ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে'। মির্জা ফখরুল প্রবীণ ও সৌম্য বিএনপি নেতা, নিশ্চয় জ্ঞানীও, উনাদেরে এই প্রশ্ন করা দরকার যে, উনারা কি ফ্যাসিবাদের দিনগুলোতে 'গণঅভ্যুত্থান' বুঝতেন? বুঝাবুঝির প্রশ্ন তোলা তো কিছুটা অভব্যতাই। কিন্তু আমার এই প্রশ্ন ব্যক্তিগত বুঝাবুঝির ব্যাপার না, রাজনৈতিক। হাসিনার দিনগুলোতে উনারা যে গণঅভ্যুত্থান বুঝতেন, আমাদের কাছে তার কোন নজির হাজির নেই এখনো। এই জায়গা থেকেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই সরলোক্তিটা গুরুত্বপূর্ণ। এই সরলোক্তি বলে, এই অবুঝ ও অনিচ্ছুক নেতাদের উপরে গণঅভ্যুত্থানও চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এইটা জুলুম ছিল।

উনারাও কি মনে করেন, জুলুম ছিল?

#রিফাতহাসান

/ একই সাথে #ফেসবুকেও প্রকাশিত।

November 24, 2025

60 readers till now, 60 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা নিয়া কোন সরকারি বেসরকারি ইন্স্ট্রাকশন চোখে পড়ছে না। ভূমিকম্পের মুখে কী করতে হবে, তারে নিয়া এই মুহূর্তেই এলাকাভিত্তিক এসেসমেন্ট এর উদ্যোগ নিন। কর্তব্য ঠিক করুন। স্থানীয় প্রশাসক লেভেলে ইমপ্লিমেন্ট করুন। প্রচারণা চালান।

#রিফাতহাসান

November 22, 2025

49 readers till now, 49 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

Post Image

রিদওয়ানুল হক, কিতাবের মানুষ। কিতাব, মানে সংবিধান, আইন, এইসব। ছাত্রমহলে প্রসিদ্ধ আইনের ওস্তাদ। উনার সাথে মাঝে মধ্যে কথা হত, ফোনে। মেলবোর্নের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়ান। আর আমি আইন কীভাবে ভাঙতে হয়, তার আলাপ, কল্পনা ও প্ররোচনা তৈরী করি। মানে, মাস্টারের দৃষ্টিতে আইন হাতে তুলে নেওয়া অপরাধী। আমি গণঅভ্যুত্থান থিকা যে লেজিটিমেসি তৈরী হয়, তারে নিয়া ভাবি। আর রিদওয়ান ভাবেন, কীভাবে এইটা এখনো প্রায় অসম্ভব ধারণা, সংবিধানের ভেতর থিকাই লেজিটিমেসি ঠিক হতে হবে, এইসব। ফলে, উনি আমারে পছন্দ করার কথা না। কিন্তু, খেয়াল করলাম, পছন্দ করেন বেশ। আমাদের যোগাযোগ শুরু তর্ক দিয়ে। বহুত আগ থিকাই৷ অনেক তর্ক আছে আমাদের। আজকেই প্রথম দেখা। দুপুরে হঠাৎ কল দিলেন। ভাবলাম, মেলবোর্ন থেকে। বললেন, চট্টগ্রাম। কফি খেতে খেতে এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে আড্ডা হল আমাদের। সন্ধ্যায়।

#রিফাতহাসান #ফেসবুকেও প্রকাশিত।

November 21, 2025

57 readers till now, 57 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

Post Image

ফেসবুক ফিরে পেলাম। আমার তো অত তাড়াতাড়ি কোথাও যাবার নেই, থেমে জিরোবার অবসর আছে। এরকম কিছু জরুরি অবসর পেলাম, গত দেড় মাসেরও অধিক সময়। এজন্য যারা আমার ফেসবুক বন্ধে অবদান রেখেছেন, তাদেরে ধন্যবাদ দেওয়া যায়। এখন থেকে, আমি কিছুটা 'আনসোশাল' থাকব।

শেখ হাসিনার আমলে, এক কবি বন্ধু, ধর্মে হিন্দু, জানাইছিলেন, তাদের বন্ধুদের একটা বড় গ্রুপ আমার সোশাল হ্যান্ডেল বন্ধে তার এবং তার অন্যান্য বন্ধুদের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি রাজি হন নাই, কারণ তিনি আমার লেখালেখিরে জরুরি ভাবেন ও ভালবাসেন। তিনি উনাদেরে হেল্প না করলেও, তখন ফেসবুক আমার একাউন্ট সাসপেন্ড করেছিল। একটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য সেই সময় তার ব্যক্তিগত কোন একজন কনটাক্টের মাধ্যমে আমার ফেসবুক একসেস ফিরে পেতে হেল্প করেন।

সব সত্ত্বেও, আমি মনে করতাম, আমার লেখালেখির প্রতি কারো বৈরী হওয়া অসম্ভব। কারণ আমি বেশ নিরীহ নীতিশাস্ত্র ও দর্শনের আলাপ করি মাত্র, যেটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কম লোকেই বুঝতে আগ্রহী, বা প্রস্তুত না। এইখানে কেউ শত্রু হন না, মাঝে মধ্যে আমার সাবজেক্ট হয়ে বিভ্রান্ত হন মাত্র। সাবজেক্ট হিশেবে, অনেকেই মাঝে মধ্যে বিমূঢ় হতে পারেন সত্য, কিন্তু উনারা আমারে বন্ধ কইরা দিতে চাইবেন, এইটা মনে হয় নাই কখনো। ফলে, মাস দেড়েক আগে একজন যখন হোয়াটসঅ্যাপে জানালেন, আমার ফেসবুক বন্ধে অবদান রাখতে একটা সংঘবদ্ধ প্রচারণা হয়েছে, এবং এ কারণেই আমার ফেসবুক বন্ধ হল, এর স্বপক্ষে কিছু পপুলার গ্রুপের স্ক্রিণশট পাঠালেন, তখন অবাক হলাম।

তখন আনসোশাল নামে একটা পারসোনাল প্লাটফর্ম এর আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করলাম। এই কাজটা আগাচ্ছে ধীরে ধীরে, অন টেস্ট। ওখানে আমাকে নিয়মিত পাবেন। কিন্তু অইখানে ফেসবুকের মত কইরাই কয়েকটা বাক্য লিখতে গিয়ে হোঁচট খেলাম। দেখলাম, রোবটের মত আলাপ হচ্ছে। জমছে না। কারণ, আমি একা একা কথা কচ্ছি।

সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের একটা কোলাহলের সাইকোলজি তৈরী করে দিয়েছে। কোলাহলের ভেতরে, আমরা কিছু মানুষ নিজের একটা নিরবতা নির্মাণ করেছি মাত্র, যাতে মুখোমুখি বইসা কথা বলতে পারি। তবে ভেবে দেখলাম, আমাদের এই অভ্যস্ততা ও অনভ্যস্ততা কাটিয়ে ওঠা একটু কঠিন হলেও, সম্ভব।

যেমন, খেয়াল করলাম, গত এক মাস সোশাল মিডিয়ায় হাজিরা না থাকায়, আমি প্রায় তেমন কিছু নিয়াই ভাবিত না। শুনলাম, জুলাই সনদ হচ্ছে। শেখ হাসিনার রায় হচ্ছে। গণভোট পণ্ড হচ্ছে। কিন্তু তার প্রায় সব কিছুই আমারে কম স্পর্শ করল। যেহেতু পত্রিকা ও টিভি দেখি না, সোশাল মিডিয়ায়ও নেই, আমি প্রায় খবরহীন একজন মানুষ হয়ে থাকতে পারাটারে এনজয় করলাম।

আজকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ফিলসফি ফেস্টে গেলাম। এইটা কাকতালীয় ছিল। ফিলসফি দেইখা আমি নিজেই আগ্রহী হইছিলাম, পরে মোজাম্মেল ভাই ও উনার ছাত্ররা অসম্ভব আগ্রহ দেখালেন। ওইখান থেকে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ মিরাজ, পরে মুকিম আর সৌরভদের সাথে দেখা, বহুদিন পর। উপরের ছবিতে ওরা তিনজনের সাথেই হাঁটছি। 'আমরা তিনজন' নামে ওদের একটা প্লাটফর্ম আছে, সম্ভবত চব্বিশের ফেব্রুয়ারিতে আমারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে গিয়েছিল ওরা। নাকি তেইশ? তো, ওরাই জানাল, আমার ফেসবুক নাকি গতকালকে থেকে পাওয়া যাচ্ছে। আমি একটু অবাক হলাম। এবং আমার অবসর থেকে যে জিরোনোর সময় হল আবার, কিছুটা বুঝলাম। যদিও, আমি সম্ববত আনসোশালই থাকারে পছন্দ করব আরো বহুদিন। এইসব ভাবতে ভাবতেই, একটু আগে ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে কোন একটা নিউজ খেয়াল করলাম, কারে যেন কোন বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা তুলে নিয়ে গেছে। এইসব নিউজ হাসিনার সময়ে প্রচুর পেতাম।

ফিলসফি ফেস্টের স্টেইজে কথা বলতে আমন্ত্রণ জানালে আমি উঠে কিছুটা ঠাট্টা করে বলতেছিলাম, বহু বছর ধইরা আমরা লঘু ছিলাম, কারণ আমরা অস্তিত্বের রিয়েলিটিরে নিয়া প্রশ্ন উত্থাপন করি নাই। অস্তিত্বের রিয়েলিটিরে নিয়া প্রশ্ন করা তো ফিলসফির জরুরি কাজ। কিন্তু এই জরুরি কাজটা আমরা বহু বছর ধইরা থামিয়ে রেখেছিলাম, রাষ্ট্রে। তো, এখন, এই খবরগুলো পড়তে পড়তে আবার ভাবছিলাম, এখনো কি প্রশ্ন করতে সক্ষম আমরা? কেন জুলাই জাগরণের পরেও বাংলাদেশ রাষ্ট্রে শাদা পোশাকের বাঘ ভাল্লুক নাগরিকদেরকে তুলে নিয়ে যাবে?

সর্বশেষ, কৃতজ্ঞতা স্বীকার। আমি সামান্য মানুষ৷ তাও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-এর দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা বন্ধু ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই সামান্যের ফেসবুক প্রফাইল উদ্ধারে আশ্চর্যজনক দ্রুততার সাথে হেল্প করলেন। আমি মুগ্ধ। এই যজ্ঞের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে আরো যাদের রেসপন্স ও আন্তরিকতা পেয়েছি, তারা হলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, ডাকসু ভিপি সাদিক কায়িম, পলিটিশিয়ান মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ, আর সাংবাদিক কদরুদ্দিন শিশির, সাইবার এক্সপার্ট মঞ্জুর শরিফ। উনাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। ইনবক্সে যে মেসেজগুলো জমছে, সবগুলোর উত্তর হিশেবে এই পোস্ট। অন্য কোথাও আলাপ হবে আবার।

#রিফাতহাসান
/ একই সাথে #ফেসবুকেও প্রকাশিত।

(1) have comments!

November 21, 2025

57 readers till now, 57 new visits today.
click to comment


মাসুম's avatar
মাসুম November 23, 2025 (Guest)

ভাই আপনার আইডি কেউ বন্ধ করে নাই, সম্ভবত অক্টোবরের ১৮ তারিখে আপনার আইডি ব্যান হয়, এই তারিখে লাখ লাখ আইডি ব্যান হয়ে গেছিলো, আমার আইডিটাও ব্যান হয়ে গেছিলো, এটা ছিলো ফেসবুকের একটা গ্লিজ, পরে তারা আবার আইডি ব্যাক দেওয়া শুরু করে।

আপনারা আইডিও অটোমেটিক ব্যাক হয়, কেউ ব্যাক করে নাই, এখানে কারোও অবদান নাই।

গণভোট নির্বাচনের দিন হওয়া একটা ফাঁদ। জাতীয় নির্বাচন এক্সক্লুসিভলি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের ব্যাপার হলেও, গণভোট রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তরে নির্বাচন কমিশনের ফাঁদে রাইখা সামনে আগানো মানে, গণভোট, সাথে জুলাই সনদেরও একটা অনিশ্চিত গন্তব্য ঠিক কইরা দেওয়া, যা একটা বড় বিপদ তৈরী করবে। ইউনৃসের এই সিদ্ধান্ত একটা খারাপ ঘটনা হইল।

(2) have comments!

November 14, 2025

51 readers till now, 51 new visits today.
click to comment


Ahmed Sayeed's avatar
Ahmed Sayeed November 28, 2025

test

Ahmed Sayeed's avatar
Ahmed Sayeed November 14, 2025

good!

আমাদের নির্মূলের রাজনীতি থেকে বেরুনোর সিদ্ধান্ত নেবার একটা ব্যাপার আছে। এমন কি আওয়ামীলীগের ক্ষেত্রেও। আএয়ামীলীগ বাংলাদেশে একটা চিরস্থায়ী শত্রুব্যবস্থা, নির্মূল ও এক ধরনের খতমের রাজনীতি জারি রেখেছিল স্বাধীনতার পর থিকা। এইটারে আমি মুজিবের তৈরী করে দেওয়া ধর্মযুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত করেই পড়ি। আমাদের এই ধর্মযুদ্ধ থিকা বেরুনোর ব্যাপার আঠে। আমরা এদেশের জনগনের মধ্যে এই ধরনের একটা টিরস্থায়ী শত্রু ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিরোধী।

(1) have comments!

November 14, 2025

41 readers till now, 41 new visits today.
click to comment


zarif's avatar
zarif November 14, 2025 (Guest)

পরবর্তীতে লীগ তো আবার ধর্মযুদ্ধেরই ডাক দিবে, সেটার কি হবে৷ ওনাদের তো বুদদয় হচ্ছে না।

খেয়াল করেন, 'লকডাউন' 'শাটডাউন' এইসব কিন্তু জুলাই বিপ্লবের শব্দ। আওয়ামীলীগের রাজনীতি তো বাংলাদেশে নেই হয়ে গেছে শেখ হাসিনার একমেবাদ্বিতীয়ম নেতৃত্ব এবং জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে। এই মুহূর্তে এরা আবার ছাত্রদের ভোকাবুলারি নিয়ে প্রাসঙ্গিক হবার, ফিরে আসার চেষ্টা করছে আবার। ভাবেন, এরাও, পুরনো ভাষা থিকা বেরুনোর হুঁশে আসছে ধীরে। এইটা, সম্ভবত, ভালই।

November 13, 2025

57 readers till now, 57 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

Post Image

সম্ভবত সিপিবি। অক্টোবর বিপ্লব হচ্ছে। লাল পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন উনারা। উনাদের অক্টোবর বিপ্লব কি জুলাই বিপ্লবকে ধরতে পারে? অন্তত যেটি প্রায় হতে পারল না, সেই জুলাই বিপ্লব?

November 12, 2025

39 readers till now, 39 new visits today.
click to comment


Be the first to comment!

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জনগণকে জিগেশ করছেন, আপনারা কি গণভোট, সনদ এসব বোঝেন? হা হা। জনগণ যে এইসব বোঝেন না, তা অবশ্য সত্যিই। ফলে, ফখরুল তাদেরকে বুঝাচ্ছেন, ঘাড়ের ওপর তাদের না বুঝা গণভোট ও সনদ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মির্জা ফখরুল প্রবীণ ও সৌম্য বিএনপি নেতা, নিশ্চয় জ্ঞানীও, উনাদেরে এই প্রশ্ন করা দরকার যে, উনারা কি ফ্যাসিবাদের দিনগুলোতে 'গণঅভ্যুত্থান' বুঝতেন? বুঝাবুঝির প্রশ্ন তোলা তো কিছুটা অভব্যতাই। কিন্তু আমার এই প্রশ্ন ব্যক্তিগত বুঝাবুঝির ব্যাপার না, রাজনৈতিক। ফ্যাসিবাদের দিনগুলোতে উনারা যে গণঅভ্যুত্থান বুঝতেন, আমাদের কাছে তার কোন নজির হাজির নেই এখনো। এই জায়গা থেকেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই সরলোক্তিটা গুরুত্বপূর্ণ। এই সরলোক্তি বলে, এই অবুঝ ও অনিচ্ছুক নেতাদের উপরে গণঅভ্যুত্থানও চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এইটা জুলুম ছিল।

(2) have comments!

November 12, 2025

38 readers till now, 38 new visits today.
click to comment


মোহাম্মদ রকি মেরাজ's avatar
মোহাম্মদ রকি মেরাজ November 12, 2025

গুরুতর অভিযোগ হলো রাজনীতিবীদরা জনগণ কে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তাদের রাজনৈতিক কাজে অযথা ইংরেজি শব্দ ব্যাবহার করছে। রাজনীতিবীদের হঠাৎ ইংরেজ হয়ে ওঠার গন্তব্য কি? বাংলাদেশের গরীব মানুষ তো আর এত কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দ বুঝে না....

ইবনে শামস's avatar
ইবনে শামস November 12, 2025 (Guest)

❤️

Tags

  • No recent tags found.